দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে হালিমা বেগম রাজধানীর এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন ফুটপাতে থাকেন। বরাবরের মতোই তীব্র শীতে স্টেশনের পাশে জুবুথুবু হয়ে রাত্রিযাপন করেন হালিমাসহ ছিন্নমূল আরও অনেকেই। হঠাৎ এক গভীর রাতে কেউ একজন তার শরীরে কম্বল জড়িয়ে দিলে উষ্ণতা অনুভব করেন। চোখ খুলে দেখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। শীতে কম্বল পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে হালিমার চোখে জল ছলছল করছিল।
শুধু হালিমা বেগম নয়; সম্প্রতি উত্তরা, এয়ারপোর্ট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গভীর রাতে শীতে কষ্টে থাকা রিকশাওয়ালা, চা বিক্রেতা, বয়স্ক, শিশু, নারী সবাইকে নিজ হাতে কম্বল গায়ে পরিয়ে দেন মেয়র আতিক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, দুদিনে উত্তরা, এয়ারপোর্ট, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকায় কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। রাস্তায়, ফুটপাতে, স্টেশনে থাকা ছিন্নমূল মানুষের মাঝে এবং রিকশা চালকদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
মেয়র বলেন, আমি সব সময় বলি, ঢাকা একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত শহর। এই শহরে একইসঙ্গে সব ধরনের পেশা শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। শিল্পপতি যেমন আছে, তেমনি গলায় ঝুলিয়ে পান বিক্রি করে সংসার চালানো লোকও আছে। শীতে যাতে এই সমস্ত নিম্ন কিংবা সীমিত আয়ের মানুষগুলো কষ্ট না পায়—এটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
আতিকুল ইসলাম বলেন, যে মানুষটার দৈনিক আয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, তার জন্য একটা গরম কাপড় কেনা কঠিন। আবার কিছু ভ্রাম্যমাণ মানুষ খোলা আকাশের নিয়ে ঘুমায়, রাস্তায় নেমে দেখেছি—তারা এই শীতে কতটুকু কষ্টে রাত পার করছে। কেউ যাতে শীতে কষ্ট না পায় ও গরম কাপড়টি আসলেই যার প্রয়োজন সে যেন পায়, এজন্য গভীর রাতটি বেছে নিয়ে নিজের হাতে কম্বল বিতরণের কাজটি করেছি। আমি বিশ্বাস করি, সমাজের বিত্তবান মানুষগুলো সাধ্যমতো শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে।