আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় ও জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান। দেশটির গণমাধ্যম এবং আফগান সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফার অভিযানে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৭১ জন আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পাকিস্তানে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থানকারী শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এরপর ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার বহিষ্কারের কার্যক্রম। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধাপে প্রায় ৩০ লাখ আফগানকে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
পাকিস্তানি পত্রিকা এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, এই সময়ে ২,২৪২ জন স্বেচ্ছায় ল্যান্ডি কোটালের নির্বাসন শিবিরে নাম লেখান এবং তোরখাম সীমান্ত হয়ে আফগানিস্তানে ফিরে যান। একই সময়ে বিভিন্ন শহর থেকে আরও ১,৪২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে নির্বাসনের জন্য পাঠানো হয়।
তোরখাম শিবিরে তালেবান প্রশাসন প্রত্যাবাসিতদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ ও নথিপত্র ব্যবস্থাপনার মতো সেবার ব্যবস্থা করেছে। ১২ সদস্যের একটি কমিটি সপ্তাহের সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে।
তালেবান সরকারের অনুরোধ সত্ত্বেও পাকিস্তান সময়সীমা বাড়ায়নি। বরং গত ২৭ মার্চ খাইবার পাখতুনখোয়ায় থাকা আফগান শিক্ষার্থীদের তথ্য চেয়ে প্রাদেশিক সরকারকে নির্দেশ দেয়।
দীর্ঘ যুদ্ধের সময় ও তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর আফগানিস্তান থেকে লাখো মানুষ পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ইসলামাবাদ দাবি করছে, এসব হামলা আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হচ্ছে—যা তালেবান সরকার অস্বীকার করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। মানবাধিকার সংস্থা, তালেবান সরকার এবং জাতিসংঘের সমালোচনার পরও এই উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) জানায়, গত ১৮ মাসে প্রায় ৮ লাখ ৭৯ হাজার আফগান পাকিস্তান ছেড়েছে।