আন্তর্বর্তী সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে সোমবার (১২ মে) কমিশনের বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে দলটির কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে স্থবির। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিও এখন বেহাল অবস্থায়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২ এর ৯০ জ(১)(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি কোনো দল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়, তাহলে ইসি সেই দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
এ ছাড়া ৯০ খ(১)(ক)(ই) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে—নিবন্ধনের জন্য একটি দলকে সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় বজায় রাখতে হবে। এই শর্ত না মানলেও ইসি নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
পরপর দুইটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া
-
তিন বছরের বেশি সময় ধরে তথ্য না দেওয়া
-
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৩% নারী নেতৃত্ব না নিশ্চিত করা
-
অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন গঠনের শর্ত লঙ্ঘন করা
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে গেজেট প্রকাশের পর নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো পৃথক নির্দেশনার প্রয়োজন নেই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, “সরকার নিষিদ্ধ করলে আমরা নিবন্ধন বাতিল করতে পারি। গেজেট প্রকাশ হলে কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।”
বর্তমানে দেশে ৫০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। অতীতে জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, পিডিপি, জাগপা এবং ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল করেছে ইসি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আওতায় দলটির অনলাইন কার্যক্রম, সমাবেশসহ সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকবে।