লন্ডনের পর্যটন এলাকাগুলোতে আবারও রিকশা ভাড়াকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন বিদেশি পর্যটক ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন—মাত্র দুই মিনিটের রিকশা যাত্রার জন্য চালক তাদের কাছে ৯০ পাউন্ড (প্রায় ১৫ হাজার টাকা) দাবি করেন।
ঘটনাটি লন্ডনের ব্যস্ততম এলাকা ওয়েস্ট এন্ডে ঘটে। ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ পর্যটকরা চালকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং বলেন, এত অল্প সময়ের জন্য এত বেশি ভাড়া নেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক ও প্রতারণা। চালক তবু নির্লিপ্তভাবে টাকা আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যান।
এই ধরনের ‘পেডিক্যাব’ বা রিকশা সাধারণত সোহো, অক্সফোর্ড স্ট্রিট, লেস্টার স্কয়ার, পিকাডিলি সার্কাস, কভেন্ট গার্ডেন ও ক্যামডেন টাউনের আশপাশে বেশি দেখা যায়। অনেক চালক নির্দিষ্ট কোনো ভাড়া তালিকা ছাড়াই যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করেন, যার ফলে পর্যটকরা সহজেই প্রতারিত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন যে, এই রিকশাগুলোর বেশিরভাগই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে এবং চালকদের কেউ কেউ লাইসেন্স ছাড়াই রাস্তায় চলাচল করেন। কেউ কেউ আবার উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে ট্রাফিক বিশৃঙ্খলারও সৃষ্টি করেন।
এক সময়কার মেয়র বরিস জনসন রিকশাচালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও, তা কার্যকর হয়নি। এখনো লন্ডনের পরিবহন কর্তৃপক্ষ (Transport for লন্ডন – TfL) এসব বাহনকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ন্ত্রিত বলে বিবেচনা করে না, ফলে এই খাতের অনিয়ম রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যটকদের লক্ষ্য করে এমন অনিয়ন্ত্রিত ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রবণতা লন্ডনের সুনামকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাদের মতে, এখনই সময় রিকশা ভাড়ার সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ, চালকদের বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশন এবং নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়ার।
ভবিষ্যতে প্রতারণা এড়াতে পর্যটকদের প্রতি পরামর্শ—রিকশায় উঠার আগে ভাড়া নিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন, এবং চেষ্টা করুন TfL অনুমোদিত বাহন ব্যবহারের।
স্থানীয়দের মতে, এই ‘রিকশা ঠকবাজি’ লন্ডনের রাস্তায় এখন এক নীরব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।